রোববার, ০৩ আগস্ট ২০২৫ , ১৮.শ্রাবণ.১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:২৯, ২ আগস্ট ২০২৫

বিজিএমইএ সভাপতি

পণ্যে ২০% মার্কিন কাঁচামাল থাকলে পাল্টা শুল্ক প্রযোজ্য হবে না

পণ্যে ২০% মার্কিন কাঁচামাল থাকলে পাল্টা শুল্ক প্রযোজ্য হবে না
বিজিএমইএ লোগো

বাংলাদেশি পণ্যে পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্। কিন্তু রপ্তানি করা তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যে ২০ শতাংশ মার্কিন কাঁচামাল থাকলে ওই পাল্টা শুল্ক প্রযোজ্য হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান

শনিবার ( আগস্ট) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলেন

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, আমাদের মার্কিন রপ্তানির প্রায় ৭৫ শতাংশ তুলাভিত্তিক পোশাক। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে বলা আছে, ন্যূনতম ২০ শতাংশ আমেরিকার কাঁচামাল (যেমন- আমেরিকার তুলা) ব্যবহার করা হলে এই অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ আমেরিকার কাঁচামাল ব্যবহার করলে বাড়তি কিছু ছাড় মিলবে

তিনি আরও বলেন, আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে স্পষ্ট বলা আছে, কিছু দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বা নিরাপত্তা চুক্তি আলোচনা এখনো চলছে, যেগুলো সম্পাদিত হলে এসব দেশের শুল্ক আরও কমতে পারে। তাই বাংলাদেশকে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, প্রায় চার মাস বিষয়টি নিয়ে বেশ উদ্বেগ ছিল। বাংলাদেশ থেকে অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের প্রধান পোশাক রপ্তানিকারী প্রতিযোগীদের তুলনায় সমান বা কাছাকাছি এবং কিছু প্রধান প্রতিযোগী যেমন চীন (৩০%) ভারতের (২৫%) তুলনায় কম

তিনি বলেন, এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রলিবারেশন ডে ট্যারিফনামে নতুন শুল্ক ঘোষণা করে। ওই সময় বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়। তখন ভারতের ওপর ২৬ , ইন্দোনেশিয়া ৩২   পাকিস্তানের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হলো। এটা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়। কারণ এত বড় শুল্ক ব্যবধানে বাজার ধরে রাখা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ২০ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, আর দেশটিতে আমাদের মোট রপ্তানির ৮৭ শতাংশ হয় তৈরি পোশাক পণ্য

যদিও এপ্রিল এর তারিফ ঘোষণা অনুযায়ী এপ্রিল থেকে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল, সেটি ৯০ দিনের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়, ফলে আমরা আলোচনার জন্য কিছুটা সময় পেলাম। তবে এপ্রিলের তারিখ থেকে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত বেস ট্যারিফ চালু করা হয়

তিনি বলে, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক অবধারিতভাবে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়াবে, যেখানে শিল্পগুলো আগে থেকেই ঊর্ধ্বমুখী উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেটাতে প্রাণান্তকরভাবে যুদ্ধ করছে। এক্ষেত্রে সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে ছোট মাঝারি কারখানাগুলো যাতে ব্যবসা থেকে ছিটকে না পড়ে তা সরকারকে নজরদারিতে রাখতে হবে। আমরা একান্তভাবে আশা করি, শিল্প দেশের স্বার্থে সরকারের সব নীতিসহায়তা চলমান থাকবে, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, বিশেষ করে কাস্টমস সংক্রান্ত নীতিগুলো শিল্পবান্ধব হবে, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং শিল্প নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ গ্যাস সরবরাহ পাবে

বিজিএমইএ থেকে আমরা আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখব। আমরা তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতামত বোর্ড সদস্যদের আলোচনার মাধ্যমে আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে কাজ করব।

আমরা মনে করি, শিল্প মালিক, সরকার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শ্রমিক সংগঠন নাগরিক সমাজসবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে শিল্পের জন্য যদি সম্মিলিতভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি তাহলে শুল্ক প্রতিবন্ধকতা না হয়ে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে