
ছবি: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
ঢাকা (১৫ মে): বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ঈদ হাসপাতালে নয়, কারাগারে করার কথা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, কারণ তিনি দন্ডপ্রাপ্ত আসামী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহানুভবতা দেখিয়ে শাস্তি স্থগিত করে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এজন্য বিএনপির উচিত আমাদের নেত্রীকে ধন্যবাদ দেওয়া।
শনিবার সকালে নিজ বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিরে ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে ঈদ উদযাপিত হচ্ছে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে’ এমন বক্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পবিত্র ঈদের দিনও বিএনপি এবং বিএনপি মহাসচিব হীন রাজনৈতিক বক্তব্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। পবিত্র ঈদের দিনও তিনি বিষোদগারের রাজনীতিটা অব্যাহত রেখেছেন।
অন্তত ঈদের দিনে বিষোদগারের, দোষারোপের রাজনীতি থেকে বিরত থাকা উচিত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তাও করেছেন আবার জিয়াউর রহমানের তথাকথিত কবরে গিয়ে। ঈদের দিনে তারা জিয়াউর রহমানের কবরে যান। নিজের আত্মীয়স্বজন, মুরব্বিদের কবরে যান, কিনা জানি না। সেখানেই বক্তব্য দিয়েছেন, বিষোদগারের রাজনীতিটা করেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে সরকারের সঠিক নীতির কারণে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপালের দিকে তাকিয়ে দেখুন, সেখানকার তুলনায় বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো। এমনকি পাকিস্তানের চেয়েও ভালো।
জীবন ও জীবিকার সঠিক সমন্বয় করে সরকার যে নীতি নিয়েছে, তাতে করোনাও নিয়ন্ত্রণে আছে, মানুষের মধ্যে হাহাকারও নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার প্রত্যেকের মোবাইল ফোনে প্রণোদনার অর্থ দিয়ে দিচ্ছে। কেউ আশা করেনি, দাবিও করেনি। এমনকি বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও মোবাইল ফোনে টাকা পাঠানোর দাবি ছিল না। এখানে অন্য কিছু হওয়ার সুযোগই নাই। মির্জা ফখরুল সাহেবরা এসব বুঝেও না বোঝার ভান করেন। কারণ, তাদের দোষারোপের রাজনীতিটা তো করতে হবে।’
এসময় মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তিনি বলেছেন ১২ বছর ধরে তাদের ঈদ নেই। তারা আসলে হিতাহিত জ্ঞান হারিে ফেলেছেন। কারণ, খালেদা জিয়ার যে মিথ্যা জন্মদিন এতো পালন করেছেন, তা তো ফাঁস হয়ে গেছে করোনা টেস্টের রিপোর্টে। এজন্য তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। গত ১২ বছরে বাংলাদেশের মানুষ যে আনন্দ-উল্লাসে ঈদ উদযাপন করেছে, তা অভাবনীয়।’
আগামীবার আমরা মুক্ত পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারব এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘করোনার মধ্যেও মানুষ চেষ্টা করেছে, ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে। মার্কেট-দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় ছিল। মানুষ কেনাকাটা করেছে। অর্থাৎ এ মহামারির মধ্যেও মানুষ চেষ্টা করেছে, ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে। তবে করোনার কারণে ঈদের যে স্বাভাবিক আনন্দ, সেটি মানুষ করতে পারেনি।
সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার চেষ্টা করেছে, মানুষ যাতে স্ব স্ব স্থানে থেকে ঈদ উদযাপন করে। এরপরও বিপুল সংখ্যক মানুষ বাড়িতে গেছেন। অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানেননি। ফিরে আসার সময়ও যদি তারা স্বাস্থ্যবিধি না মানে, তাহলে এর একটি বিরূপ প্রভাব থাকবে। জনগণের কাছে আমার অনুরোধ, ঈদে বাড়ি যাওয়ার জন্য যে হুড়োহুড়ি আমরা করেছি, সেটি যেন ফিরে আসার সময় না করি। কারণ, নিজের, নিজের পরিবার ও সর্বপরি দেশের সুরক্ষার জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজন।