মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ , ৩০.বৈশাখ.১৪৩১

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: ১৬:৩৩, ৪ জানুয়ারি ২০২৪

নির্বাচন সরে দাঁড়ালেন তরীকত চেয়ারম্যান

নির্বাচন সরে দাঁড়ালেন তরীকত চেয়ারম্যান
সংবাদ সম্মেলনে তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র তিন দিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন তরীকত ফেডারেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সম্মান জানিয়েই আমি সরে দাঁড়ালাম। এখানে আমি চারবারের মধ্যে তিনবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছি। নৌকার মাধ্যমে আমি বারবার সম্মানিত হয়েছি। উনাকে জানিয়েই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এর আগে মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফ এলাকায় নিজে বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন নজিবুল বশর।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যেহেতু ১৪ দলীয় জোট নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে ফটিকছড়িতে নৌকা প্রতীকে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন, সেহেতু উনার প্রতি সম্মান জানানো আমার নৈতিক দায়িত্বও বটে। এমতাবস্থায় ফটিকছড়িতে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা আমি সমীচীন বলে মনে করছি না। তাছাড়া আমি যদি নির্বাচনের মাঠে থাকি, তাহলে ভোটের যে সমীকরণ হবে, সেখানে আমার প্রাপ্ত ভোটের জন্য নৌকার বিজয় নিশ্চিতকরণে বাধার কারণ হতে পারে বলে মনে করি।

নজিবুল বশর চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক এবং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ দলের ‘ফুলের মালা’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু ১৪ দলীয় জোটের এই শরিক নেতাকে এবার ছাড় দেয়নি আওয়ামী লীগ।

ফটিকছড়ির এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আবু তৈয়ব। তার প্রতীক তরমুজ।

মাইজভাণ্ডারী পরিবারের আরেক সদস্য বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদও প্রার্থী হয়েছেন। তার প্রতীক একতারা। গত ২৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের চারটি আসনের চারজন প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন সাইফুদ্দিন।

তার পরদিন ২৯ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে খবর আসে, কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সনিকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম পার্টির প্রার্থীর সমর্থনে এরকম নির্দেশনার খবর জানিয়ে কয়েকটি পত্রিকায় খবরও প্রচারিত হয়। তবে এ বিষয়ে কেন্দ্রের কোনো লিখিত নির্দেশনা ছিল না। দুদিন না যেতেই ৩১ ডিসেম্বর বিকালে আবার খবর আসে নৌকার প্রার্থীকে নির্বাচনের মাঠে থাকতে বলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের দলীয় ও স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী থাকায় দলের নেতাকর্মী ও অনুসারীদের ভোট ভাগ হয়ে যাবে। এর মধ্যে মাইজভাণ্ডারী পরিবারের দুজন প্রার্থী হওয়ায় এই তরিকার অনুসারীদের ভোটও বিভক্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছিল।

এখন সেখান থেকে সরে দাঁড়ালেন তরীকত ফেডারেশনের প্রার্থী সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। ফলে এখন লড়াই হবে সনি, তৈয়ব ও সাইফুদ্দিন আহমদের মধ্যে। তবে নিয়ম অনুযায়ী ব্যালট পেপারে নজিবুল বশরের নাম ও প্রতীক ঠিকই থাকবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তরীকত নেতা বলেন, সরকার অসুবিধায় পড়ে–এমন কিছু তিনি করতে চান না। তিনি বলেন, নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফটিকছড়ি আসন থেকে সরে দাঁড়ালাম, দেশের অন্য আসনগুলোতে আমাদের প্রার্থী থাকবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সবাই আমাকে ভালোবাসে, ফটিকছড়িবাসীও আমাকে ভালোবাসে। আমি ফটিকছড়িবাসীর সাথে সবসময় সুখে দুঃখে পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব।

সুত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম